ঢাকা, শুক্রবার   ০৩ মে ২০২৪

বাচ্চার বিকাশে আপনি নিজেই বাধা হচ্ছেন নাতো ? 

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১০:০৬, ১৩ জানুয়ারি ২০২৩ | আপডেট: ১০:১২, ১৩ জানুয়ারি ২০২৩

ছয় মাসের পর বাচ্চা বসা শিখবে, এক বছরে হাঁটা শিখবে, দেড় বছরে শব্দ শিখবে, দুই থেকে আড়াই বছরে পুরো বাক্য বলবে। এগুলোই বাচ্চার বেড়ে ওঠার মাইলফলক (মাইলস্টোন)। বাচ্চার বেড়ে ওঠাকে ব্যাখ্যা করার সুবিধার্থে নির্দিষ্ট এই লক্ষ্য গুলো উল্লেখ করা হয়।

চিকিৎসাবিজ্ঞানের সুবিধার্থে এটি মূলত একটি বাচ্চার বেড়ে ওঠাকে ব্যাখ্যা করার রূপরেখা। তবে এটিকেই যদি অভিভাবকরা একমাত্র চরম সত্য বলে ধরে নেন এবং তার ব্যত্যয় ঘটলেই বিচলিত হয়ে পড়েন তাহলে তা অবশ্যই বাচ্চার ওপর নেতিবাচক প্রভাবই ফেলবে।  

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভিন্ন অভিভাবদের গ্রুপ পর্যবেক্ষণ করলে দেখা মিলবে এমন অনেক তথাকথিত মাইলফলক। যেখানে চিহ্ন দিয়ে বলা হচ্ছে বাচ্চা কোন বয়সে কী কী কার্যকলাপ করবে। কখন হামাগুড়ি দেবে, কখন বসবে, কখন হাঁটবে। 

শুধু সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেই নয় বাস্তব জীবনেও এই বিষয়গুলোর জোর চর্চা চলছে, যা অনেক সময় চাপ সৃষ্টি করছে। 

সাম্প্রতিক এক জরিপে দেখা গেছে ১০ জনের মধ্যে ছয় জন মার্কিন মাতাপিতা তাদের বাচ্চাদের এই ধরণের বিকাশের মাইলফলক পূরণ করা নিয়ে চিন্তিত। 

বাকিরা এই বিষয়টি নিয়ে কম চিন্তিত। তারা মনে করেন, তাদের বাচ্চারা তাদের নিজ গতিতেই সবকিছু শিখবে। 

এই বিষয়টিই প্রশ্ন জাগিয়েছে, বাচ্চার শারীরিক ও মানসিক বিকাশের মাইলফলকের কেন্দ্রবিন্দু কী? এবং মাতাপিতার সেগুলো কীভাবে ব্যবহার করা উচিৎ? 

এক্ষেত্রে মনে রাখতে হবে স্বাস্থ্যকর্মী কিংবা চিকিৎসকরা এই মাইলফলক অনুসরণ করেন তাদের সুবিধার্থে। তাদের উদ্দেশ্যের সঙ্গে অভিভাবেকের চিন্তা ভাবনা মিলবে এমনটা নয়। এটি আসলে অভিভাবকদের জন্য পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে অনুসরণ করার মত নয়। 

বোস্টন বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা সহযোগী ক্রিস শেলড্রিক বলেন, “খুব সুনির্দিষ্টভাবে বলা যায়, মাইলফলক হল একটি শিশুর আচরণের একটি বর্ণনা। যা একজন শিশু নির্দিষ্ট বয়সে করতেও পারে নাও করতে পারে। এটি মূলত একটি আদর্শ মানদণ্ড। কিন্তু তাই বলে ওই মানদণ্ড থেকে পিছিয়ে পড়াই যাবেনা, পড়লেই আপনার বাচ্চার আচরণ স্বাভাবিক নয় বিষয়টি এমন নয়। 

এই বিষয়ে অভিভাবককে শান্ত থাকতে হবে। তাদের বাচ্চা এখনো হাঁটার চেষ্টা করছেনা এর কারণ হতে পারে বাচ্চা মা-বাবার ব্যক্তিত্ব শান্ত প্রকৃতির, যেকারণে বাচ্চাও শান্ত প্রকৃতির হিসাবেই বড় হচ্ছে। 

নিউইয়র্কের পেডিয়াট্রিক ফিজিক্যাল থেরাপিস্ট ক্যাটলিন রিকার্ড বলেছেন, “ আমরা জানি যে একটি শিশু প্রথম তিন বছরে যা শেখে এবং মস্তিষ্কের বৃদ্ধি যেটুকু হয় তা বিশাল।“ 

এ জন্য বাচ্চাদের মাইলফলক অর্জনের জন্য চাপ দেওয়ার কোনো প্রয়োজন নেই। বরং এতে উলটো ফল হতে পারে। মাইলফলক অর্জনের জন্য অনেক সময় বাচ্চাকে হাঁটা শেখাতে ওয়াকার দেওয়া হয়। কিন্তু এগুলো দেওয়ার ফলে স্বতস্ফূর্তভাবে হাঁটা শেখার প্রকৃয়া ব্যাহত হয়। 

বাচ্চাকে বড় করতে গেলে অভিভাবকের মাইলস্টোন সম্পর্কে জানা জরুরি। অবশ্যই সেটি বিবেচনাও করতে হবে। তবে এ নিয়ে উদ্বিগ্ন হওয়া যাবেনা, আতঙ্কিত হওয়া যাবেনা বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। 

সূত্র: বিবিসি
 
এসবি/  


Ekushey Television Ltd.


Nagad Limted


© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি